শিশুদের উপর থেকে স্কুলের হোমওয়ার্কের চাপ কমাতে চীনে নতুন আইন পাশ

স্টার নিউজ ডেস্ক:
শিশুদের উপর থেকে স্কুলের হোমওয়ার্কের চাপ কমাতে চীনে নতুন একটি শিক্ষা আইন পাশ করা হয়েছে। পাশাপাশি শিশুরা যাতে বিশ্রাম ও শরীরচর্চার জন্য পর্যাপ্ত সময় পায় এবং খুব বেশিক্ষণ যাতে ইন্টারনেটে সময় ব্যয় না করে সে ব্যাপারে অভিভাবকদের নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে।
শনিবার দেশটির চীনের আইনসভায় এ সংক্রান্ত আইন পাশ হয়। তবে বাড়িতে স্কুলের কাজ বিষয়ক আইনটির বিস্তারিত এখনো জানানো হয়নি। তবে স্থানীয় গণমাধ্যমে বলা হয়েছে, নতুন এই আইনটিতে শিশুদের মানবিক বোধ, বুদ্ধিমত্তার বিকাশ এবং সামাজিক অভ্যাস প্রতিপালনের ব্যাপারে অভিভাবকদের উৎসাহ দেওয়া হয়েছে।
দেশটির স্থানীয় সরকার কর্তৃপক্ষ আইনটি বাস্তবায়নে দায়িত্ব পালন করবে বলে জানা গেছে। দরকারি অর্থায়নের দায়িত্বও থাকবে স্থানীয় সরকারগুলোর।
চীনের জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম উইবোতে আইনটি বিষয়ে অভিভাবকদের মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। অনেকেই এই উদ্যোগের প্রশংসা করেছেন।
অন্যদিকে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ অথবা অভিভাবকরা নিজেরাও সঠিকভাবে আইনটি বাস্তবায়ন করতে পারবেন কিনা তা নিয়ে অনেকে সংশয় প্রকাশ করেছেন। একজন প্রশ্ন তুলেছেন, ‘আমি সপ্তাহে ছয়দিন সকাল নয়টা থেকে রাত নয়টা পর্যন্ত কাজ করি। যখন আমি রাতে বাসায় ফিরি তখন আমাকে পরিবারের লেখাপড়ার দায়িত্বও নিতে হবে’?
আরেকজন লিখেছেন, ‘কর্মীদের শোষণ করে আবার তাদের সন্তান নিতে বলা উচিৎ নয়’। এর আগে শিশুদের ওপর পড়াশোনার চাপ কমাতে দেশটিতে আগস্ট মাস থেকে ছয় ও সাত বছর বয়সীদের লিখিত পরীক্ষা নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
দেশটির কর্মকর্তারা সতর্ক করে বলেছেন, শিশুদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এ কারণে শিশুদের ইন্টারনেটে আসক্তি কমাতে গত বছর দেশটিতে বেশ কিছু ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
এদিকে, দেশটির অনলাইন টিউটর ব্যবস্থায়ও কিছু পরিবর্তন আনা হয় জুলাই মাসে। এর ফলে শিক্ষার প্রধান বিষয়গুলো শিক্ষকরা আর অনলাইনে পড়াতে পারছেন না। নতুন আইনটিতে শিক্ষাখাতে বিদেশি বিনিয়োগের উপর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা হয়েছে। গৃহশিক্ষকদের উপরও কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে।
চীনের জন্মহার উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যাওয়ায় সরকারের এসব উদ্যোগকে শিশুদের অভিভাবকদের উপর থেকে আর্থিক চাপ কমানোর উদ্যোগ হিসেবে দেখা হয়েছিল। শিক্ষায় বৈষম্য চীনে একটি বড় সমস্যা বলে মনে করা হয়। দেশটির বিত্তবান অভিভাবকেরা শীর্ষ সারির স্কুলগুলোতে সন্তানদের শিক্ষায় বিপুল পরিমাণে অর্থ খরচ করে থাকেন।