সাবেক নির্বাচন কমিশনার বীর মুক্তিযুদ্ধা মাহবুব তালুকদার আর নেই

স্টার নিউজ ডেস্ক:
সাবেক নির্বাচন কমিশনার ও বীর মুক্তিযোদ্ধা মাহবুব তালুকদার আর নেই (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। বুধবার (২৪ আগস্ট) দুপুর একটার দিকে তার মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে।
গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মাহবুব তালুকদারের মেয়ে আইরিন মাহবু্ব। মাহবুব তালুকদার দীর্ঘদিন ধরে ক্যানসার ভুগছিলেন।
আইরিন মাহবুব বলেন, বুধবার বেলা ১২টার দিকে মাহবুব তালুকদার অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসকেরা জানান, মাহবুব তালুকদার ম্যাসিভ হার্ট অ্যাটাকে আক্রান্ত হয়েছেন। আনুমানিক বেলা ১টার দিকে তিনি মারা যান।
২০১৭ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি মাহবুব তালুকদারকে এম নুরুল হুদার নেতৃত্বে গঠিত পাঁচ সদস্যের বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের সদস্য হিসেবে রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ কর্তৃক নিয়োগ পান।
মাহবুব তালুকদার ১৯৪২ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারী জন্মগ্রহণ করেন। তার দেশের বাড়ি নেত্রকোনা জেলার পূর্বধলা উপজেলায়। তিনি ঢাকা নবাবপুর হাইস্কুল, ঢাকা কলেজ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যায়ন করেন। পরবর্তীকালে তিনি ঢাকা জগন্নাথ কলেজ, বাংলাদেশ প্রকৌশল ও কারিগরি বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) এর স্থাপত্য বিভাগ ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে শিক্ষকতা করেন।
১৯৭১ সালে তিনি মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন ও মুজিবনগন সরকারের তথ্য মন্ত্রণালয়ের চাকুরিতে যোগ দেন। এ সময় তিনি স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র্রের সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন। ১৯৭২ সালের ২৪ শে জানুয়ারি রাষ্ট্রপতি আবু সাঈদ চৌধুরী তাকে উপসচিবের পদমর্যাদায় রাষ্ট্রপতির স্পেশাল অফিসার নিযুক্ত করেন।
রাস্ট্রপতি মুহম্মদুল্লাহর সময়ে তিনি তার পাবলিক রিলেশনস্ অফিসার ছিলেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রাষ্ট্রপতি হওয়ার পর জনাব তালুকদার তার সহকারি প্রেস সচিব (উপসচিব) এর দায়িত্ব পালন করেন।
বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে তাকে তদানিন্তন ক্যাডার সার্ভিসে অন্তর্ভুক্ত করা হয় যা পরবর্তীকালে বিসিএস প্রশাসন হিসেবে রূপান্তরিত হয়। একসময়ে তিনি বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক ছিলেন। চাকুরি জীবনের শেষ পর্যায়ে তিনি ১৯৯৮ সালে বাংলাদেশ সংসদ সচিবালয়ে অতিরিক্ত সচিবের পদে কর্মরত ছিলেন।
মাহবুব তালুকদার একজন বিশিষ্ট সৃজনশীল লেখক। কবিতা, গল্প, উপন্যস, স্মৃতিকথা, ভ্রমনকাহিনী মিলিয়ে তার প্রকাশিত গ্রন্থসংখ্যা চল্লিশ। তিনি ২০১২ সালে বাংলা একাডেমি পুরষ্কার লাভ করেন। তার স্ত্রীর নাম নীলুফার বেগম। এই দম্পতির দুই কন্যা ও এক পুত্র রয়েছে।