জুলাই আন্দোলনের বেশিরভাগ মানসিক অসুস্থতায় ভুগছেন: গবেষণার তথ্য

স্টার নিউজ ডেস্ক:
জুলাই-আগস্টে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় চোখে আঘাতপ্রাপ্ত বেশিরভাগই মানসিক রোগে ভুগছেন, এমন চিত্র উঠে এসেছে জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট পরিচালিত এক গবেষণায়।
মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ৫৫ তরুণের ওপর গবেষণা চালায়, যাদের বেশির ভাগই ২২ বছরের কম বয়সী শিক্ষার্থী, যারা চোখের চিকিৎসায় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটে ভর্তি রয়েছেন। গবেষণার উদ্দেশ্য ছিল আহত তরুণরা বিষণ্নতা, উদ্বেগ ও মানসিক চাপে কী মাত্রায় ভুগছেন তা পরীক্ষা করা। গবেষণায় দেখা যায়, আহতদের মধ্যে প্রায় ৭৫ শতাংশ হালকা থেকে গুরুতর বিষণ্নতায় ভুগছেন এবং তাদের মধ্যে ২৫ শতাংশের অবস্থা অত্যন্ত গুরুতর স্তরে পৌঁছেছে। গবেষণায় আরও দেখা যায়, ৫০ শতাংশেরও বেশি ভুক্তভোগী হালকা থেকে গুরুতর উদ্বেগে ভুগছেন, ২০ শতাংশের বেশি অত্যন্ত গুরুতর উদ্বেগের সঙ্গে লড়াই করছেন এবং প্রায় ৬০ শতাংশ মানসিক চাপে ভুগছেন। জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মুনতাসির মারুফ বুধবার জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে (এনআইওএইচ) আয়োজিত এক কর্মশালায় এ গবেষণার তথ্য তুলে ধরেন। অরবিস ইন্টারন্যাশনালের সহযোগিতায় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট জুলাই আন্দোলনে আহতদের দৃষ্টিশক্তি ও মানসিক স্বাস্থ্য সম্পর্কিত এ কর্মশালার আয়োজন করে। কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. সায়েদুর রহমান।
তিনি বলেন, ‘বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহত ব্যক্তিদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসা নিশ্চিত করতে সরকার সবকিছু করবে। ডাটাবেজ চূড়ান্ত করতে বিলম্ব হওয়ায় জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে নিহত ও আহতদের আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতির প্রক্রিয়া এখনো শেষ হয়নি। সরকার সাড়ে ৯ হাজার থেকে ১০ হাজার আহতের নাম পেয়েছে এবং এখন পর্যন্ত অর্ধেক তথ্য যাচাই করা সম্ভব হয়েছে। যাচাই শেষে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি এবং পুনর্বাসন প্রক্রিয়া শুরু হবে বলে তিনি জানান। বিশেষ সহকারী আরও বলেন, ‘সরকার আহতদের চিকিৎসা, পুনর্বাসন ও কর্মসংস্থান নিশ্চিত করার জন্য কাজ করছে। সরকার খরচ নিয়ে উদ্বিগ্ন নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, আহতদের সর্বোত্তম চিকিৎসা দেওয়ার জন্য যেখানে দরকার সেখানে নেওয়া হবে।’ ইতোমধ্যে ১০ জনকে থাইল্যান্ড ও সিঙ্গাপুরে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে বলেও তিনি জানান।
আহতদের মধ্যে বেশ কয়েকজনের প্রশ্নের জবাবে প্যানেল সদস্যরা বলেন, তারা আহতদের শরীরে থাকা সকল বুলেট অপসারণের জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করেছেন, তবে কিছু এখনও রয়ে গেছে। গুলিগুলো তাদের কোন ক্ষতি করবে না বলেও আশ্বস্ত করেন তারা। কর্মশালায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব মো. সাইদুর রহমান। অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. আবু জাফর, এনআইওএইচ এর পরিচালক অধ্যাপক ডা. খায়ের আহমেদ চৌধুরী এবং অরবিস ইন্টারন্যাশনালের কান্ট্রি ডিরেক্টর ডা. মুনির আহমেদ।