রেমিট্যান্সের জাদু সম্ভবত শেষ হতে চলেছে : ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য্য

স্টার নিউজ ডেস্ক:
এসডিজি বাস্তবায়নে নাগরিক প্ল্যাটফর্মের কনভেনর ও বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মানীয় ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য্য মনে করছেন, এতদিন রেমিট্যান্সের যে জাদু ছিল সেটা সম্ভবত শেষ হতে চলেছে। করোনা মহামারিকালেও প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্স ছিল বেশ আশাব্যঞ্জক। তবে তা সম্প্রতি নিম্নমুখী হতে শুরু করেছে।
আজ রবিবার (৮ আগস্ট) নাগরিক প্ল্যাটফর্ম ‘জাতীয় বাজেট ২০২১-২২ বাস্তবায়ন: পিছিয়ে পড়া মানুষেরা কীভাবে সুফল পাবে?’ শীর্ষক সংলাপে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনের সময় তিনি এ কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে যুক্ত ছিলেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও নাগরিক প্ল্যাটফর্মের চেয়ারম্যান সুলতানা কামাল, সিপিডি’র সম্মানীয় ফেলো অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজুর রহমান এবং ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান।
সংলাপে প্রবন্ধ উপস্থাপনের সময় দেবপ্রিয় বলেন, বাংলাদেশে শুধু আয়, কর্মসংস্থান ও মজুরি কমছে না, খাদ্যপণ্যের দামও বাড়ছে। করোনার দ্বিতীয় ধাক্কায় বিশেষ করে মার্চ, এপ্রিল, মে ও জুন মাসের প্রভাব নিয়ে ২০২১-২০২২ অর্থবছর শুরু করেছি। অনেকটা দুর্বল অর্থনীতির মধ্যে চলতি বছর শুরু করেছি। আর এর সবচেয়ে বড় ধাক্কা লেগেছে পিছিয়ে পড়া মানুষের ওপর। নতুন খবর হচ্ছে জুলাই মাসের হিসাবে রফতানি কমেছে ১১ দশমিক ২ শতাংশ। অর্থনীতির সবচেয়ে শক্তিশালী জায়গা ছিল বৈদেশিক খাত। জুলাই মাসের তথ্য বলছে বৈদেশিক খাতেও এক ধরনের ভাঙন দেখা দিয়েছে।
জুলাই মাসে ২৮ শতাংশ রেমিট্যান্স কমেছে বা পতন ঘটেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিশেষজ্ঞরা সবাই একমত হবে রেমিট্যান্সের যে জাদু সেটা সম্ভবত শেষ হতে চলেছে। কারণ, মানুষ বিদেশে গিয়েছে কম, এসেছে বেশি। সরকারি প্রণোদনার কারণে হুন্ডি থেকে মানুষ ব্যাংকিং খাতে টাকা পাঠিয়েছে। এ অবস্থায় জাদু শেষ হয়ে যাচ্ছে কিনা সেটাই বোঝার বিষয় রয়ে গেছে। রফতানি আবার আগের জায়গায় ফিরে যেতে পারবে কিনা সে বিষয়ে সন্দেহ রয়েছে। কর আদায়সহ সব সূচক যদি বিবেচনায় নেওয়া হয় তাহলে দেখবেন প্রাথমিক সংকেত ভালো না।
পিছিয়ে পড়া মানুষকে বাঁচিয়ে রাখতে হলে প্রত্যক্ষ সহায়তা বাড়াতে হবে বলে উল্লেখ করেন দেবপ্রিয়। তিনি বলেন, আমাদের মূল লক্ষ্য হচ্ছে করোনা মহামারির মধ্যে পিছিয়ে পড়া মানুষদের কীভাবে এগিয়ে নেওয়া যায়। সেজন্য উন্নয়নশীল দেশে পিছিয়ে পড়া মানুষদের সহায়তায় সরাসরি অর্থের সাহায্য বৃদ্ধির মাধ্যমে অর্থের প্রবাহ বাড়াতে হবে। এর পাশাপাশি খাদ্য সহায়তা অব্যাহত রাখতে হবে। কেননা, অতিমারির শুরুর পর থেকে পিছিয়ে পড়া ৮০ শতাংশ মানুষ খাদ্য ব্যয় কমিয়ে দিয়েছে। তাদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে।