
স্টার নিউজ ডেস্ক:
প্রায় ১৮ মাস পর দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের দ্বার উন্মুক্ত হতে যাচ্ছে। সেপ্টেম্বরের শেষের দিকে খুলে দেওয়া হবে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ের কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়। শুরু হবে সশরীরে ক্লাস-পরীক্ষা। তবে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্কুলের ছুটি আরও বাড়ছে।
আগামী নভেম্বরে এসএসসি, ডিসেম্বরের মাঝামাঝি এইচএসসি পরীক্ষা সরাসরি নেওয়ার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত বলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন সূত্রে জানা গেছে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন সূত্র বলছে, শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের টিকা দেওয়া প্রায় শেষ পর্যায়ে। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও টিকার আওতায় এসেছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮০ শতাংশের বেশি শিক্ষার্থীকে টিকা দেওয়া হয়েছে বলে সূত্র জানিয়েছে। সেজন্যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার ব্যাপারে সরকার ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
তবে সংক্রমণ পাঁচ শতাংশের নিচে নেমে আসা পর্যন্ত স্কুল পর্যায়ের সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে না। ফলে স্কুলের ছুটি আরেক দফা বাড়ছে।
জানতে চাইলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদরাসা বিভাগের সচিব মো. আমিনুল ইসলাম খান বলেন, সচিব কমিটির বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী এ সংক্রান্ত একটি নির্দেশনা দিয়েছেন। যেহেতু উচ্চ শিক্ষা স্তরের শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী ও অধিকাংশ শিক্ষার্থী টিকার আওতায় এসেছে সেজন্য এই স্তরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হতে পারে।
প্রধানমন্ত্রীর বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেন। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার পর কবে খুলে দেওয়া হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী দ্রুত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার কথা বলেছেন, কিন্তু সুনির্দিষ্ট তারিখ বলেননি। তবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে। করোনার সংক্রমণ কমতে শুরু করেছে। পরিস্থিতি যখনই অনুকূলে আসবে, প্রথম সেই সুযোগটুকু আমরা নেব।
জানা গেছে, প্রথমে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো খুলে আটকে থাকা স্নাতক ও স্নাতকোত্তরের চূড়ান্ত পরীক্ষাগুলো আগে শেষ করার পরিকল্পনার রয়েছে সরকারের। এরপর আটকে থাকা স্নাতক প্রথম বর্ষ ভর্তি পরীক্ষার দিকে এগোবে। এরপর কলেজ ও সবশেষে বিদ্যালয় খুলে দেওয়া হবে।
সূত্র জানায়, সরকার উচ্চতর পর্যায় থেকে ধাপে ধাপে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছে। টিকা দেওয়া শেষ হলে সেপ্টেম্বরের শেষে বা অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে বিশ্ববিদ্যালয় খোলার চিন্তাভাবনা রয়েছে। ক্লাস শুরুর অন্তত এক সপ্তাহ আগে আবাসিক হলগুলো খুলে দেওয়া হবে। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন ও বাস-মাইক্রোবাস ইত্যাদি চলাচলের উপযোগী করা হবে।
এদিকে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন সাত কলেজে ১ সেপ্টেম্বর থেকে পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ৮ সেপ্টেম্বর থেকে মাস্টার্সের স্থগিত পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা করেছে। এভাবে অন্যান্য সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনোটি পরীক্ষা নিচ্ছে, আবার কোনোটি পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা করেছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) মানদণ্ড অনুযায়ী, কোনো দেশে সংক্রমণ পাঁচ শতাংশে নেমে এলে সেখানকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া যেতে পারে। কিন্তু সোমবারও দেশে বর্তমানে সংক্রমণের হার ছিল সাড়ে ১৫ শতাংশ, আর করোনায় মারা গেছেন ১১৭ জন।