স্টার নিউজ ডেস্ক:
বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার সম্পর্ককে ‘মডেল’ অ্যাখা দিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, ‘আমাদের সম্পর্কটা এতটা সলিড যে আমরা সোনালী অধ্যায়ে পৌঁছে গেছি। দুদেশের গভীর সম্পর্কের দিকে সারা পৃথিবী তাকিয়ে আছে।’
সোমবার (৬ ডিসেম্বর) রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবে সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম আয়োজিত ‘স্বাধীনতার ৫০ বছর’ শীর্ষক আলোচনা সভায় অংশ নিয়ে এ কথা বলেন তিনি।
ড. মোমেন বলেন, ‘ভারতের কারণে ৭১ সালে আমাদের মর্যাদা বেড়েছে। আজও গভীর সম্পর্কের কারণে সারা পৃথিবী আমাদের দিকে তাকিয়ে থাকে। বাংলাদেশ-ভারতের সম্পর্ক একটা মডেল। আমাদের যতগুলো বড় বড় সমস্যা সেগুলো আমরা ডায়ালগ তথা আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করেছি। আমরা এখানে একটা বুলেটও খরচ করিনি। আমাদের এটা দেশে দেশে পৌঁছে দিতে হবে। যেন অন্যরা এটা অনুকরণ করে।’
মোমেন বলেন, ভারতের সঙ্গে আমাদের কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর হয়েছে। আগামী ৫০ বছরে আমাদের যত ধরনের সমস্যা আছে সবগুলোর সমাধান করব। আমরা ডায়ালগ বা আলোচনার মাধ্যমে সব সমস্যার সমাধান করব। আমি তো সেদিনের আশায় আছি, দুদেশের মানুষের আসা-যাওয়ায় কোনো ভিসা লাগবে না। আমরা সড়ক, রেল ও নৌ-পথে আরও কানেকটিভিটি বাড়াতে চাই।
বাংলাদেশ ও ভারত এবার বিশ্বের ১৮টি মিশনে যৌথভাবে ‘মৈত্রী দিবস’ পালন করছে। আগামীতে বাংলাদেশে যত মিশন রয়েছে সবগুলোতে ভারতকে নিয়ে মৈত্রী দিবস পালন করতে চান ড. মোমেন। বলেন, ‘ভারতের সোলজার আমাদের জন্য রক্ত দিয়েছেন। আমরা রক্তের সম্পর্ককে আরও গভীরভাবে উদযাপন করতে চাই। ভারতের সঙ্গে ১৮টি দেশে মৈত্রী দিবস পালন করছি। আমরা আশা করব, আগামীতে বাংলাদেশের যত মিশন আছে যৌথভাবে (ভারত ও বাংলাদেশ) আমরা মৈত্রী দিবস পালন করব। এক্ষেত্রে আমি ভারতীয় সরকারের সাহায্য চাই।’
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দক্ষিণ এশিয়াতে কানেকটিভিটিতে অগ্রাধিকার দিচ্ছেন— উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘ভারত, ভুটান, শ্রীলঙ্কার সঙ্গে কানেকটিভিটি নিয়ে আমাদের প্রধানমন্ত্রী আলাপ করেছেন। আমরা ভারতের সঙ্গে কানেকটিভিটিতে এমন উন্নয়ন চাই, সারাবিশ্ব যেন আমাদের দিকে তাকিয়ে থাকে। ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে কাজ করার মতো অনেক সুযোগ আছে। আমরা কানেকটিভিটির ক্ষেত্রে ভুটানের সঙ্গে দুটা বন্দর খুলে দিয়েছি। যাতে বাংলাদেশ, ভারত ও ভুটান নদীপথ ব্যবহার করতে পারি। ভারতও এতে রাজি হয়েছে।’
অনুষ্ঠানে ভারতের হাইকমিশনার বিক্রম দোরাইস্বামী বলেন, ‘বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ায় দক্ষিণ এশিয়ার মানচিত্রই শুধু পরিবর্তন হয়নি, বদলে গেছে এ অঞ্চলের ভূ-রাজনৈতিক অবস্থা ও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড। দুদেশের মধ্যে বিদ্যমান সমস্যার সমাধান করে, নতুন প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করে আমাদের সম্পর্ককে আরও এগিয়ে নিতে হবে। এক্ষেত্রে আমাদের সবার দায়িত্ব রয়েছে।’
ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, বঙ্গবন্ধু না থাকলে এ দেশ নয় মাসে স্বাধীনতা অর্জন করতে পারত না। এটা ভুলে গেলে চলবে না যে কত সময় ধরে দেশটাকে স্বাধীনতা এনে দিতে তিনি লড়াই করে গেছেন। এখন বাইরে কোথাও আর বাংলাদেশকে পরিচয় করিয়ে দিতে হয় না, এটা মর্যাদার।’
সেক্টর কমান্ডারস ফোরামের কার্যকরী সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ নুরুল আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন ঢাকায় নিযুক্ত ভুটানের রাষ্ট্রদূত রিনচেন কুয়েন্টশীল প্রমুখ।