শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবিতে তার বাসভবন ঘেরাও

স্টার নিউজ ডেস্ক:
শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসের পদত্যাগের দাবিতে তার বাসভবনের সামনে দেশটির বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের হাজার হাজার শিক্ষার্থী বিক্ষোভ করেছেন। রোববার (২৪ মার্চ) এই দ্বীপরাষ্ট্রটির প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন তারা।
বিক্ষোভকারীরা যাতে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনের দিকে যেতে না পারেন, সেজন্য রোববার রাজধানী কলম্বোর বিভিন্ন সড়কে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে পুলিশ। কিন্তু পুলিশি ব্যারিকেড পেরিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনের দিকে যান বিক্ষোভরত হাজার হাজার শিক্ষার্থী। এক ছাত্রনেতা বলেন, ‘আপনি রাস্তা অবরোধ করতে পারেন, কিন্তু পুরো সরকার ঘরে না যাওয়া পর্যন্ত আমাদের সংগ্রাম থামাতে পারবেন না।’
পুলিশ বলছে, শ্রীলঙ্কার ক্ষমতাসীন সরকারের প্রধান মাহিন্দা রাজাপাকসে সেই সময় বাসভবনে ছিলেন না। পরে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা শান্তিপূর্ণভাবে সেখান থেকে চলে গেছেন। মাহিন্দার ছোট ভাই ও দেশটির প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপাকসের অফিসের বাইরে গত প্রায় দুই সপ্তাহের প্রত্যেকদিন হাজার হাজার বিক্ষোভকারী সরকারের পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ করছেন।
এর আগে, দেশজুড়ে বিক্ষোভের সময় উত্তেজিত জনতা সরকারি কর্মকর্তাদের বাড়ি ও অফিসে হামলা চালানোর চেষ্টা করেন। গত সপ্তাহে দেশটির মধ্যাঞ্চলীয় শহর রামবুক্কানায় সড়ক অবরোধ করে উত্তেজিত জনতার বিক্ষোভের সময় গুলি চালায় পুলিশ। দেশটিতে মাসব্যাপি চলমান বিক্ষোভে পুলিশের গুলিতে প্রথমবারের মতো এক ব্যক্তির প্রাণহানি ঘটে এই শহরে।
দক্ষিণ এশিয়ার এই দ্বীপরাষ্ট্র পর্যটন খাতের আয়ের ওপর ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল। করোনাভাইরাস মহামারির কারণে দেশটির পর্যটন খাতে ব্যাপক ধস নেমেছে। ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে জ্বালানি আমদানি করতে না পারায় এর দামও ব্যাপক বৃদ্ধি পেয়েছে দেশটিতে। একদিকে দেশটিতে চাল, গুঁড়া দুধ, চিনি, গমের আটা এবং ওষুধের সরবরাহ কমেছে। অন্যদিকে, মূল্যস্ফীতি মানুষের দুর্দশাকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে।
১৯৪৮ সালে স্বাধীনতা পাওয়ার পর এবারই প্রথম সবচেয়ে বিপর্যয়কর অর্থনৈতিক সঙ্কটের মুখোমুখি হয়েছে শ্রীলঙ্কা। দেশটিতে নিত্য-প্রয়োজনীয় খাদ্য ও পণ্যসামগ্রীর তীব্র সঙ্কট চলছে। আমদানিতে বিপর্যয় দেখা দেওয়ায় দ্রব্যমূল্য আকাশ ছুয়েছে।
উৎপাদনে ভাটা পড়ায় দিনের বেশিরভাগ সময়ই বিদ্যুৎবিহীন থাকতে হচ্ছে দক্ষিণ এশিয়ার এই দ্বীপ রাষ্ট্রের বাসিন্দাদের। দীর্ঘ কয়েক মাসের বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্নতা, রেকর্ড মুদ্রাস্ফীতি এবং তীব্র খাদ্য ও জ্বালানি ঘাটতি লঙ্কান জনগণের মাঝে ব্যাপক অসন্তোষ সৃষ্টি করেছে। সূত্র : এএফপি