
স্টার নিউজ ডেস্ক:
জাতীয় গ্রিডে বিপর্যয়ের কারণে দেশের অধিকাংশ অঞ্চলে বিদ্যুৎ নেই। তবে রাত আটটার মধ্যে ঢাকার বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হবে বলে জানিয়েছেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। চট্টগ্রামের বিদ্যুৎ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে আরও এক ঘণ্টা সময় লাগবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
মঙ্গলবার (৪ অক্টোবর) বেলা দুইটার দিকে ইস্টার্ন গ্রিড ফেল করার পর ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট ও ময়মনসিংহ বিভাগে বিদ্যুৎ বিপর্যয় ঘটে। বিদ্যুৎ সরবরাহ কখন স্বাভাবিক হবে, এ নিয়ে প্রশ্নের মধ্যে বিদ্যুৎ উৎপাদন ও সরবরাহের দায়িত্ব প্রাপ্ত সরকারি সংস্থা বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড ও পাওয়ার গ্রিডের পক্ষ থেকে যখন কিছু জানানো হচ্ছে না, সে সময় ফেসবুকে এ নিয়ে স্ট্যাটাস দেন পলক।
গ্রিড লাইনে বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের বিষয়টি ঢাকার বাইরের পিডিবি কর্মকর্তারা নিশ্চিত করলেও সদরদপ্তরের কর্মকর্তারা নাম প্রকাশ করে কিছু বলতেও চাইছেন না গণমাধ্যমকর্মীদেকে।
এর মধ্যে চট্টগ্রামে একজন পোশাক শিল্প মালিক জানিয়েছেন, বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হতে আট থেকে ১০ ঘণ্টা সময় লাগবে বলে তাদেরকে জানানো হয়েছে।
পলকও ফেসবুকে একই ধরনের কথা জানান। তিনি বলেন, ‘আমিন বাজার গ্রিড পর্যন্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হয়েছে।…সন্ধ্যার থেকে রাত ৮ টার মধ্যে ঢাকা শহরের সব এলাকা এবং তারপর ৯ টার মধ্যে চট্টগ্রামের সব এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হবে।’
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, ‘ন্যাশনাল গ্রিড ঠিক করতে একটু সময় লাগবে। আমার মনে হয় ২-৩ ঘণ্টার আগে হবে না, সময় লাগবে।
‘আমরা রিকভার করার জন্য চেষ্টা করছি। সন্ধ্যার মধ্যে আমরা চেষ্টা করছি রিকভার করার জন্য। অন্তত যেসকল আমাদের সেনসিটিভ এলাকা আছে, কেপিআইভুক্ত, ওইগুলো আমরা স্টার্ট (বিদ্যুৎ সরবরাহ) কবে দেবো।’
এই বিপর্যয়ের কারণ অনুসন্ধানে দুটি তদন্ত কমিটি করা হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের বিষয়টি পুরোপুরি কারিগরি বিষয় জানিয়ে এ নিয়ে কোনো গুজবে কান না দেয়ার অনুরোধও করেন পলক। তিনি বলেন, ‘পাওয়ার গ্রিডে ট্রিপ এক সেকেন্ডে হলেও রিস্টরেশন অনেক লম্বা আর জটিল প্রসেস।
‘পাওয়ার গ্রিডের ইঞ্জিনিয়ার ও টেকনিশিয়ানরা কাজ করছেন, গুজব না ছড়িয়ে একটু ধৈর্য ধরার অনুরোধ থাকল শহর অঞ্চলের সবার প্রতি।’
পাওয়ার গ্রিডের এক কর্মকর্তা জানান, এতে বেশ কয়েক ঘণ্টা সময় লাগবে। কারণ, গ্রিড বিপর্যয় হলে সব বিদ্যুৎকেন্দ্র স্বয়ংক্রিয়ভাবে বন্ধ হয়ে যায়। তার প্রতিটি ম্যানুয়ালি চালু করতে হয়।
এটি আবার বেশ কষ্টসাধ্য এ কারণে যে, বন্ধ কেন্দ্র চালু করতেও বিদ্যুৎ লাগে। সে জন্য দেশে চালু আছে এমন কেন্দ্র থেকে বা চালু করতে বিদ্যুৎ লাগে না, এমন কেন্দ্র আগে উৎপাদনে নিয়ে আসতে হয়। তারপর সেখান থেকে বিদ্যুৎ নিয়ে অন্য কেন্দ্র চালু করতে হয়।
এভাবে প্রতিটি কেন্দ্রই আলাদা আলাদা চালু করার পর তার আওতাধীন এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু করতে হয়।
ম্যানুয়েলি বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো চালু করার যে প্রক্রিয়া তাতে নরসিংদীর ঘোড়াশাল ও গাজীপুরের টঙ্গীর কেন্দ্র বিকেলের মধ্যেই উৎপাদনে এসেছে বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমে বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে জানানো হয়েছে।
