
স্টার নিউজ ডেস্ক:
ইসরায়েলের অভিযানের পর গাজার সর্ববৃহৎ হাসপাতাল আল-শিফা ‘ডেড জোনে’ পরিণত হয়েছে বলে জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা-ডব্লিউএইচও।
ডব্লিউএইচও’র কয়েকজন এবং জাতিসংঘের আরো কয়েকজন কর্মকর্তা শনিবার গাজা সিটির হাসপাতাল আল-শিফা পরিদর্শন করে আসার পর এক মূল্যায়নে এ কথা বলেন বলে জানায় সিএনএন।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্স (সাবেক টুইটার) এ ডব্লিউএইচও-র পক্ষ থেকে এক পোস্টে বলা হয়, “জাতিসংঘের দলটি প্রায় এক ঘণ্টা হাসপাতালের ভেতরে কাটিয়েছে। সে সময়ে হাসপাতালটির খুব কাছে প্রচণ্ড লড়াই চলছিল। দলটি হাসপাতালের প্রবেশ পথে একটি গণকবর দেখতে পেয়েছে। এবং বলেছে, ওই গণকবরে ৮০টির বেশি মৃতদেহ কবর দেওয়া হয়েছে।চিকিৎসার অভাবে গত দুই বা তিন দিনে হাসপাতালের অনেক রোগী মারা গেছেন বলেও জানায় ডব্লিউএইচও। আল-শিফায় এখন ২৫ জন স্বাস্থ্যকর্মী এবং ২৯১ জন রোগী রয়েছে। চিকিৎসা সেবা পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় গত দুই বা তিন দিনে অনেক রোগী মারা গেছে।৩২টি শিশুসহ অনেক রোগীর অবস্থা খুবই গুরুতর। দুইজন রোগী কোনো রকম ভেন্টিলেশন ছাড়াই আইসিইউ তে রয়েছে। ২২ জন ডায়ালাইসিসের রোগী জীবন রক্ষাকারী চিকিৎসা পাচ্ছেন না। হাসপাতালের কয়েকজন স্বাস্থ্যকর্মী এবং রোগী জাতিসংঘের কর্মীদের বলেছেন, তারা তাদের ‘স্বাস্থ্য এবং জীবনের নিরাপত্তা নিয়ে চরম আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন’।
আল-শিফার রোগী এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের দক্ষিণ গাজার অন্য দুইটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে তারা ‘জরুরি ভিত্তিতে পরিকল্পনা করছে’ বলেও জানিয়েছে ডব্লিউএইচও।
বলেছে, “সেখানে বেশিরভাগ রোগীই যুদ্ধাহত, অনেকের শরীরের জটিল সব হাড় ভেঙে গেছে বা অঙ্গচ্ছেদ করা হয়েছে। কেউ কেউ মাথায় আঘাত, পোড়া ক্ষত, বুকে-পেটে গুরুতর আঘাত নিয়ে শয্যায় পড়ে আছেন। ২৯ জন রোগীর মেরুদণ্ডে গুরুতর আঘাত রয়েছে। তারা এমনকি স্বাস্থ্য কর্মীদের সহায়তা ছাড়া নাড়াচাড়া পর্যন্ত করতে পারেন না।
হাসপাতালে সংক্রমণ প্রতিরোধের চিকিৎসা ও অ্যান্টিবায়োটিকে অভাবে অনেক রোগীর ক্ষত মারাত্মক রূপ নিয়েছে।
গত বুধবার ভোর থেকে আল-শিফা হাসপাতালের ভেতর অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী। যেখানে রোগী ও চিকিৎসাকর্মীদের পাশপাশি প্রাণ বাঁচাতে গাজার বিভিন্ন স্থান থেকে পালিয়ে আসা হাজার হাজার ফিলিস্তিনি আশ্রয় নিয়েছিল।
ইসরায়েলের দাবি, হামাস হাসপাতালটি তাদের সামরিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করছে। তাছাড়া হাসপাতালের নিচে ভূগর্ভে হামাসের একটি কমান্ড সেন্টার রয়েছে। যদিও হামাস এবং হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ উভয়ই ইসরায়েলের ওই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। সিএনএন স্বাধীনভাবে কোনো পক্ষের দাবির সত্যতা যাচাই করতে পারেনি। হাসপাতালে অভিযান চালানোর কারণে ইসরায়েলের উপর আন্তর্জাতিক চাপ বাড়ছে। যদি ইসরায়েল তাদের দাবির পক্ষে প্রমাণ দিতে ব্যর্থ হয় তবে দেশটির বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের গুরুতর লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠবে।
