সন্ধ্যা থেকে কম্বাইন্ড প্যাট্রলিং, কঠোর পদক্ষেপ সরকারের

 

একরামুল কাইছার ::
দেশের বিভিন্ন স্থানে অপরাধীদের দৌরাত্ম্য বেড়ে যাওয়ার ঘটনায় হার্ডলাইনে যাচ্ছে সরকার। জনজীবনে স্বস্তি আনতে আজ সন্ধ্যা থেকেই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কম্বাইন্ড প্যাট্রলিং শুরু হয়েছে। ২৩ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর বনশ্রীতে স্বর্ণ ব্যবসায়ী আনোয়ারুল ইসলামকে গুলি করার ঘটনায় রাজধানীসহ দেশব্যাপী ছিনতাই, চাদাবাজি, খুন, ধর্ষণসহ নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জনজীবনে ভোগান্তি লাঘবে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।

জানা যায়, পুরো ঢাকা শহরসহ যেসব স্থানে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে, সেসব জায়গায় প্যাট্রলিং বাড়াবে সরকার। আজ সন্ধ্যা থেকে পুরো ঢাকা শহরে শুরু হবে এই কম্বাইন্ড প্যাট্রলিং। পুলিশ, সেনাবাহিনী, বিজিবি, নেভির সমন্বয়ে একসঙ্গে কম্বাইন্ড প্যাট্রলিং চলবে। এছাড়াও অনেক জায়গায় চেকপোস্ট বসানো হবে। বিভিন্ন জায়গায় চেকপোস্ট বসিয়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি মনিটরিং করা হবে। একই সঙ্গে ইন্টেলিজেন্স গেদারিং স্টেপআপ করবে সরকার । যারা ইন্টেলিজেন্ট উইং, এজেন্সি আছে, তারা তাদের মতো করে গেদারিং বাড়াবে। সে অনুযায়ী অ্যাকশনে যাবে। প্রথমে রাজধানীতে তারপর সারাদেশে এই কার্যক্রম চলবে বলে জানা গেছে।

রাজধানীর বনশ্রীতে স্বর্ণ ব্যবসায়ী আনোয়ারুল ইসলামকে গুলি করার ঘটনায় প্রত্যক্ষদর্শী আবদুস সালাম বলেন, ছিনতাইকারীরা তিনটি মোটর সাইকেল যোগে এসে ঐ ব্যবসায়ির পথরোধ করে তার ব্যাগ টানাটানি করতে থাকে, তিনি চিৎকার করতে থাকলে একপর্য়ায়ে একজন তাকে গুলি করে ব্যাগ নিয়ে চলে যায়, তারপর আমরা তাকে হাসপাতালে ভর্তি করতে সিএনজিতে তুলে দিই।

ছিনতাইয়ের শিকার হওয়া একি এলাকার আরেক বাসিন্দা বলেন, ইদানিং আমাদের এখানে ছিনতাই, রাহাজানি বেড়ে গেছে, গত পরশু আমাকে তিনজন আটকিয়ে আমার মোবাইল ও পকেটে থাকা চার হাজার টাকা জোড় করে নিয়ে নেয়।

এ ব্যাপারে প্রধান উপদেষ্টার প্রেসসচিব শফিকুল আলম বলেন, আজকে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাসহ আমরা খুবই গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত সিয়েছি । প্রথম সিদ্ধান্ত হলো, পুরো ঢাকা শহরসহ যেসব স্থানে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে, সেসব জায়গায় আমরা প্যাট্রলিং বাড়াব। এই প্যাট্রলিং আজ সন্ধ্যা থেকে পুরো ঢাকা শহরে দেখতে পারবেন। কম্বাইন্ড প্যাট্রলিং চালানো হবে। পুলিশ, সেনাবাহিনী, বিজিবি, নেভি- সবাই একসঙ্গে কম্বাইন্ড প্যাট্রলিং করবে।

ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার বলেন, ঢাকা খুবই যানজটপূর্ণ শহর। কোথাও কিছু ঘটলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর যেতে দেরি হয়। সেজন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীগুলোকে প্রচুর মোটরসাইকেল দেওয়া হবে। খুব দ্রুত মোটরসাইকেল কেনা হবে যেন দুজন করে দ্রুত মোটরসাইকেলে ঘটনাস্থলে যেতে পারেন। আপাতত পুলিশের জন্য ১০০ মোটরসাইকেল নেওয়া হচ্ছে। পরে আরও ১০০ নেওয়া হবে। অন্যান্য বাহিনীর যারা আইনশৃঙ্খলার কাজে নিয়োজিত, তাদের জন্যও কিছু নেওয়া হবে। আমরা চাই বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি যত দ্রুত সম্ভব উন্নত করতে। কারণ মানুষের জান-মালের নিরাপত্তার দায়িত্ব হচ্ছে সরকারের। আমরা এই কাজটা সুচারুরূপে করতে চাই। আমরা গুরুত্বসহকারে সবকিছু মনিটরিং করছি। আশা করছি আপনারা দৃশ্যমান উন্নতি খুব দ্রুত দেখতে পাবেন।

এদিকে কক্সবাজার বিমান ঘাটিতে হামলাসহ সংঘর্ষের ইস্যুতে আজ কোনো আলোচনা হয়েছে কি না, জানতে চাইলে প্রেস সচিব বলেন, আমরা কক্সবাজারে এসপি ও সিকিউরিটি এজেন্সি আছে তাদের কাছ থেকে প্রতিবেদন চাচ্ছি, তারা আমাদের দিলে আপনারা জানতে পারবেন।

সবকিছু মিলিয়ে অন্তরবর্তী সরকারের তৎপরতা বৃদ্ধিতে জসমনে স্বস্তি বিরাজ করবে এমনটি মনে করছেন সচেতন জনগণ।