
স্টার নিউজ ডেস্ক:
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বিএম কনটেইনার ডিপোতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৩৩ জনে দাঁড়িয়েছে। ফায়ার সার্ভিসের কর্মী ও পুলিশসহ আরও অনেক মানুষ আহত হয়েছেন। তাদের ভর্তি করা হয়েছে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।
রোববার (৫ জুন) চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে (চমেক) হাসপাতাল সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। ধারণা করা হচ্ছে নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
সীতাকুণ্ডে ভয়াবহ আগুন লাগার ঘটনায় গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রোববার (৫ জুন) প্রধানমন্ত্রীর প্রেস উইং থেকে পাঠানো এক শোক বার্তায় এ তথ্য জানানো হয়।
সেখানে বলা হয়, প্রধানমন্ত্রী নিহতদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান। প্রধানমন্ত্রী আহতদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেওয়ারও নির্দেশনা দেন। প্রধানমন্ত্রী দ্রুত আগুন নিয়ন্ত্রণে এনে উদ্ধার তৎপরতা পরিচালনা এবং ক্ষতিগ্রস্তদের সর্বাত্মক সহযোগিতা করতে সরকারের পাশাপাশি দলীয় নেতাকর্মীদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বিএম কনটেইনার ডিপোতে লাগা আগুন ১২ ঘণ্টায়ও নিয়ন্ত্রণে আসেনি। উল্টো বাতাসের কারণে আগুন বাড়ছে। এছাড়া ডিপো এলাকায় রয়েছে পানি স্বল্পতা। ফলে আগুন নেভাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে ফায়ার সার্ভিসকে।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স জানায়, রাত ১১টার সময় তারা আগুন লাগার খবর পায়। তখন থেকেই তারা আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে যাচ্ছে। সবশেষ এ রিপোর্ট লিখা পর্যন্ত রোববার (৫ জুন) সকাল সাড়ে ৯টায় আগুন জ্বলতে দেখা যায়।
আহত ও দগ্ধদের কান্না-চিৎকারে হাসপাতালের বাতাস ভারী হয়ে ওঠেছে। রোগীর চাপ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসকরা। চট্টগ্রাম মেডিকেল ছাড়াও নগরীর অন্যান্য হাসপাতাল এবং কম্বাইন্ড মিলিটারি হাসপাতালেও (সিএমএইচ) দেওয়া হচ্ছে চিকিৎসা।
ফায়ার সার্ভিসের উপপরিচালক আনিসুর রহমান জানান, এখনও উদ্ধার অভিযান চলছে। রোববার (৫ জুন) সকালেও আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসেনি। কিছুক্ষণ পর পর বিস্ফোরণের কারণে আগুন নেভাতে সমস্যা হচ্ছে। ডিপোতে বিপুল পরিমাণ ‘হাইড্রোজেন পার অক্সাইড’ দাহ্য রাসায়নিক রয়েছে।
এদিকে, চমেক হাসপাতাল বার্ন ইউনিটে ৫২ জন এবং অর্থোপেডিক বিভাগে ১০ ভর্তি রয়েছে। চমেক হাসপাতালের বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগের প্রধান ডা. রফিক উদ্দিন আহমেদ বাংলানিউজকে বলেন, ৫২ জন ওয়ার্ডে ভর্তি রয়েছে। তাদের বেশিরভাগেরই শ্বাসনালী পোড়া। তাদের বাঁচাতে আমাদের সাধ্যমতো চেষ্টা করে যাচ্ছি।
এ অবস্থায় চট্টগ্রামের সব চিকিৎসকের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকদেরও চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ সরকারি হাসপাতালগুলোতে কাজে যোগ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন জেলা সিভিল সার্জন।