করোনা ও বিচারকার্য : প্রসঙ্গ বাংলাদেশ।

করোনা ভাইরাস রোগ ২০১৯ (কোভিড-১৯) নামক একটি রোগ বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ার কারণে বৈশ্বিক মহামারীর সৃষ্টি হয়েছে। রোগটির নাম-গুরুত্ব তীব্র শ্বাসতন্ত্রীয় রোগ লক্ষণ সমষ্টি সৃষ্টিকারী করোনা ভাইরাস (SARS-CoV-2)। এই রোগটি ১ ডিসেম্বর ২০১৯ সালে চীনের হুসেইন প্রদেশের উড়ান নগরীতে সৃষ্টি হয়।
১১ মার্চ ২০২০ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা রোগটিকে বৈশ্বিক মহামারী হিসেবে ঘোষণা করে।
বাংলাদেশে প্রথম করোনা ভাইরাস রোগী শনাক্ত করা হয় ৮ মার্চ ২০২০। যাদেরকে শনাক্ত করা হয় তারা ইতালি ফেরত।
সরকার ১৬ মার্চ ঘোষণা করেন যে, ১৮ মার্চ থেকে স্কুল,কলেজ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে। ১৮ মার্চ করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে প্রথম মৃত্যুর ঘটনা ঘটে।
সরকার ২১ মার্চ ঘোষণা করেন যে, ৩১ মার্চ পর্যন্ত দশটি দেশের সহিত বিমান চলাচল বন্ধ থাকবে।
করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে ২৬ মার্চ সাপ্তাহিক ছুটির সঙ্গে মিলিয়ে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেন।
যদিও বাংলাদেশ এই সময়টিকে লকডাউন বলা হয়নি, সাধারণ ছুটি হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছে।
প্রথম লকডাউন হয় মাদারীপুরে শিবচর উপজেলায়।
১৭ মার্চ ২০২০ সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষনা করা হয়েছে। মূলত ২৬ মার্চ থেকে অঘোষিত লকডাউন চলছে।
আকাশ,নৌ,সড়ক ও রেলসহ সকল প্রকার যান চলাচল, সকল প্রকার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, অফিস, আদালত, কলকারখানা বন্ধ রয়েছে।
১১ মে ২০২০ শারীরিক উপস্থিতি ব্যতিরেখে তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে ভার্চুয়াল উপস্থিতির মাধ্যমে আদালত পরিচালিত শুরু হয়।
১ জুলাই ২০২১ থেকে সরকার কঠোর বিধি নিষেধ ঘোষণা করে। এরপর সীমিত আকারে ভার্চুয়ালী চলে সুপ্রিম কোর্ট আর অতি জরুরি বিষয়ে শুনানির জন্য ম্যাজিস্ট্রেট কোর্ট। জরুরি বিষয় শুনানির নামে আদালত প্রায় বন্ধ রয়েছে।
মেডিকেল সার্ভিসের মতো বিচারব্যবস্থাও মানুষের জন্য জরুরি হওয়ার স্বত্ত্বেও আদালত প্রায় বন্ধ ঘোষণা করা হয়। বিচারপ্রার্থী ও আইনজীবীরা ভার্চুয়াল উপস্থিতিতে বা ব্যতিরেখে আদালত চলবে তাই আশা করে।
মূলত বৈশ্বিক এই মহামারী অনিয়ন্ত্রিত এবং অকার্যকর প্রদক্ষেপের মাধ্যমে সবকিছু অচল করে দিয়ে বৈশ্বিক মহামারী মোকাবিলা করা বোধগম্য নয়।

মোহাম্মদ শহীদুল ইসলাম
এডভোকেট
বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট।
email-shahidulislam4811@gmail.com
তারিখ ১২.০৭.২০২১