গাউছুল আজম মাইজভাণ্ডারীর রওজায় চড়ানো হলো গিলাপ, ওরশে লাখো ভক্তের ঢল, শুক্রবার আখেরি মোনাজাত

স্টার নিউজ ডেস্ক:
মাইজভাণ্ডারী তরিকার প্রবর্তক হযরত গাউছুল আজম সৈয়দ আহমদ উল্লাহ মাইজভাণ্ডারী (ক.) এঁর ১১৯তম বার্ষিক ওরশ উপলক্ষে তাঁর মাজারে গিলাপ চড়ানো হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) সকালে গাউছুল আজম সৈয়দ আহমদ উল্লাহ মাইজভাণ্ডারী (ক.) এঁর রওজায় গিলাপ চড়ান গাউছিয়া আহমদিয়া মঞ্জিলের সাজ্জাদানশীন হযরত মওলানা শাহসুফি সৈয়দ এমদাদুল হক মাইজভাণ্ডারী ও নায়েব সাজ্জাদানশীন ও মোন্তাজেম সৈয়দ ইরফানুল হক মাইজভাণ্ডারী। এসময় উপস্থিত ছিলেন ভারতের অধ্যাপক ড. শেখ মকবুল ইসলাম, খান এগ্রো গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আলহাজ্ব সৈয়দুল হক খান, ফনিক্স শিপিং লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্যাপ্টেন সৈয়দ সোহেল হাসনাত, চট্টগ্রাম চেম্বারের সাবেক পরিচালক জহিরুল ইসলাম চৌধুরী আলমগীর, মেঘনা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আবু তাহের, শাহজাদা সৈয়দ এরহাম হোসাইন, শাহজাদা সৈয়দ মানাওয়ার হোসাইন। পরে রওজা প্রাঙ্গণে তাওয়াল্লোদে গাউছিয়া, জিকির ও মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়। মোনাজাত পরিচালনা করেন সাজ্জাদানশীন সৈয়দ এমদাদুল হক মাইজভাণ্ডারী। মাইজভাণ্ডার দরবার শরীফের প্রতিষ্ঠাতা গাউছুল আজম মাইজভাণ্ডারী মওলানা শাহসুফি সৈয়দ আহমদ উল্লাহ (ক.) প্রকাশ হযরত কেবলার ১১৯তম ওরশ উপলক্ষে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে মাইজভাণ্ডারে এসেছেন আশেক-ভক্তরা। ওরশের প্রধান দিবস শুক্রবার (২৪ জানুয়ারি) দিবাগত রাত ১২টা ১ মিনিটে গাউছিয়া আহমদিয়া মঞ্জিল শাহী ময়দানে বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর শান্তি শৃংখলা, কল্যাণ ও মুক্তি কামনা করে মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের দরবারে আখেরী মোনাজাত পরিচালনা করবেন সাজ্জাদানশীন সৈয়দ এমদাদুল হক মাইজভাণ্ডারী। হযরত গাউছুল আজম সৈয়দ আহমদ উল্লাহ মাইজভাণ্ডারী (ক.) এঁর ১১৯তম বার্ষিক ওরশ উপলক্ষ্যে ভক্তদের নিরাপত্তা বিধান এবং অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে অতিরিক্ত পুলিশ ছাড়াও সাদা পোশাকে পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন রয়েছে। প্রতিবছরের মতো এ বছরও ওরশে বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকা ছাড়াও ভারত, সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইন, সৌদি আরব, কাতার, কুয়েত, চায়না, যুক্তরাজ্য, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া ও ওমানসহ নানা দেশ থেকে অসংখ্য ভক্ত-অনুরক্ত অংশ নিচ্ছেন। এছাড়া মাইজভাণ্ডার ওরশ শরীফ সুপারভিশন কমিটির উদ্যোগে ক্লোজ সার্কিট (সিসি) ক্যামেরা ও ভিডিও চিত্র ধারনের মাধ্যমে সার্বক্ষণিক নজরদারির ব্যবস্থা করা হয়েছে। বিভিন্ন স্থানে প্রয়োজনীয় গাড়ি পার্কিংসহ মেহমানদের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়ে থাকা, সময়মতো জামাত সহকারে নামাজ আদায়, বিশুদ্ধ পানীয় জল, স্বাস্থ্যসম্মত স্যানিটেশন, আলোকসজ্জা, এবং প্রয়োজনীয় ওষুধসহ বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। গাউছিয়া আহমদিয়া মঞ্জিলের নায়েব সাজ্জাদানশীন সৈয়দ ইরফানুল হক মাইজভাণ্ডারী (ম.)’র সার্বিক তত্ত্বাবধানে মাইজভাণ্ডার ওরশ শরীফ সুপারভিশন কমিটির বিপুলসংখ্যক স্বেচ্ছাসেবক ও মাইজভাণ্ডারী স্পেশাল ফোর্স (এমএসএফ) দায়িত্ব পালন করছে।

মাইজভাণ্ডার দরবার শরীফে বই প্রকাশনা উৎসব অনুষ্ঠিত হয়
চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি মাইজভাণ্ডার দরবার শরীফে এক জাঁকজমকপূর্ণ বই প্রকাশনা উৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে। গাউছিয়া আহমদিয়া মঞ্জিলের নায়েব সাজ্জাদানশীন সৈয়দ ইরফানুল হক মাইজভাণ্ডারীর সভাপতিত্বে মঙ্গলবার আয়োজিত এ উৎসবে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গাউছিয়া আহমদিয়া মঞ্জিলের সাজ্জাদানশীন হযরত মওলানা শাহসুফি সৈয়দ এমদাদুল হক মাইজভাণ্ডারী। প্রকাশনা উৎসবে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সৈয়দ এরহাম হোসাইন এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. শেখ সাদী, ভারতের অধ্যাপক ড. শেখ মকবুল ইসলাম এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের থিয়েটার ও পারফরমিং স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আহমেদুল কবির, সহযোগী অধ্যাপক ধিমান চন্দ্র বর্মন, সহযোগী অধ্যাপক ড. শাহমান মইশান, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের ড. মাসুম আহমেদ, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের মুনমুন নেসা চৌধুরী, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগীত বিভাগের শিক্ষকদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন নাদিরা ইসলাম, মিশকাতুল মোমতাজ, এবং কৌশিক আহমেদ, হিসাববিজ্ঞান বিভাগের মোহাম্মদ মুহিউদ্দিন এবং চট্টগ্রাম ইন্ডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটির ইংরেজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক কাজী মো. সাইফুল আচফিয়া, শিক্ষাবিদ ড. শামসুদ্দীন শিশির এবং চট্টগ্রাম জেলা শিল্পকলা একাডেমির জেলা সাংস্কৃতিক কর্মকর্তা সৈয়দ আয়াজ মাবুদ। প্রকাশনা উৎসবে সুফি সাহিত্য ও আধ্যাত্মিক চেতনার বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা হয়। সৈয়দ ইরফানুল হক মাইজভাণ্ডারী বলেন, “সুফি দর্শন মানুষের নৈতিক ও আত্মিক উন্নয়নকে উৎসাহিত করে। এই প্রকাশনা উৎসব জ্ঞানের আলো ছড়িয়ে দিতে এবং সমাজে নৈতিক মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।”প্রধান অতিথি হযরত মওলানা শাহসুফি সৈয়দ এমদাদুল হক মাইজভাণ্ডারী বলেন, “সুফি চিন্তাধারা শুধু আধ্যাত্মিক উন্নয়নের পথ প্রদর্শক নয়, এটি মানবিকতা, সহনশীলতা এবং সামাজিক সংহতির মজবুত ভিত্তি গড়ে তোলে।”